শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
নড়াইলে খুলনার রেঞ্জ ডিআইজিকে ফুলেল শুভেচ্ছা রাণীশংকৈলে ৭৫ জন গ্রাম পুলিশ পেলেন বাই-সাইকেল ও পোশাক আজকের গাছ- আগামীর নিঃশ্বাস- বৃক্ষরোপনে ইউএনও রুবেল রানা ইছামতী নদীতে থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার কিশোরগঞ্জকে গ্রীন ও ক্লিন কিশোরগঞ্জ গড়তে চাই- নবাগত ইউএনও নীলফামারীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইমারত নির্মাণ তারাগঞ্জে একই ব্যক্তির ৬ গরু চুরি নড়াইলে এক গৃহবধূর তিন সন্তান জন্ম ধুনটে বসতভিটা অবৈধ দখল চেষ্টায় থানায় অভিযোগ আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানী করবেন না- এটিএম আজহার ফুলবাড়ীর দৌলতপুরে জমি জমার বিরোধে মারপিট ১৭ বছর পর রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা জুলাই বিপ্লবী শহীদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও আলচনা ত্রিশালে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ মিলল পুকুরে জলঢাকায় এক শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দিলেন ইউএনও কর্মীবান্ধব সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন জাহিদ হোসেন তারাগঞ্জে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে টিন ও চেক বিতরণ কুমিল্লায় র‌্যাবের হাতে মাদক সহ গ্রেপ্তার ২ ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গাসহ গ্রেপ্তার ১

বাউফলে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

দুলাল হোসেন- পটুয়াখালি জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ‘বাউফল সরকারি কলেজ’সহ প্রায় ৪শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনারহীন। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে অন্যত্র ছুটতে হয়। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঁশ-কাঠের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলেও অধিকাংশ স্কুল ও মাদ্রাসায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে- ১৯৬৬ইং সালে বাউফল সরকারি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৮ইং সালে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালে নতুন ভবন নির্মাণকালে ভেঙে ফেলা হয় শহীদ মিনারটি। এরপর আর শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠার ২৬বছর পার হলেও ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজে আজও নির্মাণ হয়নি শহীদ মিনার। সম্প্রতি কেশবপুর কলেজে শহীদ মিনারের জায়গায় নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করায় শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলা হয়। বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও শহীদ মিনার নেই ৫বছর ধরে।

এছাড়াও কেশবপুর এন.এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চন্দ্রদ্বীপ আ স ম ফিরোজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলী আকবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ শৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভরিপাশা মুন্সি হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় ডালিমা সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ে শহীদ মিনারের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে- উপজেলায় ১১টি কলেজ, ৫৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৭টি মাদ্রাসা ও ২৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৭টি কলেজে শহীদ মিনার আছে। ৬৭টি মাদ্রাসাসহ ৩২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এছাড়াও উপজেলায় শতাধিক বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে।

যার কোনোটিতে নেই শহীদ মিনার। কিছু সংখ্যক বিদ্যালয়ে কলাগাছ, কাঠ ও বেঞ্চের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা দিবস পালিত হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে একুশের চেতনা, মূল্যবোধ এবং এর তাৎপর্য জানা ও বোঝা থেকে উপেক্ষিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগেই শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

বাউফল সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ সাকিব আহম্মেদ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, কয়েক বছর ধরে কলেজে শহীদ মিনার নেই। শিক্ষক ও কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা উপজেলা প্রশাসনের সাথে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও অনেকে ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করার সুযোগ পান না।

কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বশার তালুকদার বলেন- শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে শহীদ মিনারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

বাউফল সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সামনুন কবির নেজাদ বলেন- আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। যার কারণে সাধারন শিক্ষার্থীরা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন না। আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করছি।

বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ নার্গিস আখতার একই ভাবে বলেন- জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি তাড়াতাড়ি শহিদ মিনারের কাজ শুরু হবে।

বাউফল প্রথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান খাঁন ফিরোজ বলেন- শহিদ মিনার তৈরির জন্য আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আলাদা বরাদ্ধ থাকা উচিৎ।

উপজেলার ২৩৫টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকা নিয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ ওয়ালী উল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান- বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে একাধিক বার চাহিদা পাঠিয়েছি। এছাড়াও স্থানীয় ভাবে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবছর ২টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলবে।

বাউফল উপজেলা মাদ্রাসা জেনারেল টিচার এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন- স্বাধীনতার পর কোনো সরকার মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। স্কুল কলেজের মত মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা প্রয়োজন। যাতে ভাষা দিবস সম্পর্কে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা জানতে পারে।

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল হক বলেন- বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। যেসব বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই তাদের তালিকা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন- সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমেই বাউফল উপজেলার যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com